ডায়াবেটিস টাইপ ২ একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যা শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি প্রধানত জীবনযাত্রার অভ্যাস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ওজন বৃদ্ধি এবং শারীরিক অক্রিয়তার কারণে ঘটে। তবে সুস্থ জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং কিছু সাধারন পরামর্শ মেনে চললে ডায়াবেটিস টাইপ ২ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া যায়।
১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করুন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন
করে
খাদ্য।
আপনি
যদি
ডায়াবেটিস টাইপ
২
থেকে
সুস্থ
হতে
চান,
তবে
আপনাকে
কিছু
বিশেষ
খাবারের প্রতি
গুরুত্ব দিতে
হবে:
- কম
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) খাবার: গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এমন খাবারের একটি সূচক যা জানায় খাবারের পর গ্লুকোজের পরিমাণ কত দ্রুত রক্তে প্রবাহিত হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে শাকসবজি, ফলমূল, সম্পূর্ণ শস্য এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
- প্রোটিন
এবং ভালো চর্বি: মাছ, মুরগির মাংস, ডাল, বাদাম এবং অলিভ অয়েল বা অ্যাভোকাডো তেল জাতীয় খাবার খেতে পারেন। এটি শরীরের শক্তির স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- খাদ্য
পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। অতিরিক্ত খাওয়া রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে, তাই নিয়মিত ছোট পরিসরে খাবার খান।
২. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন
ব্যায়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন
করে।
নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে শরীরের
ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়ানো যায়
এবং
রক্তে
শর্করার স্তর
নিয়ন্ত্রণে রাখা
সম্ভব।
আপনি
সপ্তাহে অন্তত
150 মিনিট
হাঁটতে
বা
সাইকেল
চালাতে
পারেন।
এছাড়া
যোগব্যায়াম বা
সুইমিংও উপকারী
হতে
পারে।
৩. মানসিক চাপ কমান
চিন্তা
বা
মানসিক
চাপের
কারণে
শরীরে
কোর্টিসল হরমোনের পরিমাণ
বেড়ে
যায়,
যা
রক্তে
গ্লুকোজের পরিমাণ
বৃদ্ধি
করতে
পারে।
তাই,
মানসিক
চাপ
কমানোর
জন্য
ধ্যান,
যোগব্যায়াম, সঙ্গীত
শোনা
বা
প্রকৃতির মাঝে
সময়
কাটানো
উপকারী
হতে
পারে।
৪. পর্যাপ্ত নিদ্রা নিন
নিদ্রার অভাবও
ডায়াবেটিসের উপর
প্রভাব
ফেলে।
প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ভালো
ঘুম
শরীরকে
সুস্থ
রাখতে
সহায়ক। ঘুমের
অভাব
রক্তে
শর্করার মাত্রা
বেড়ে
যেতে
পারে,
তাই
পর্যাপ্ত ঘুম
নিশ্চিত করুন।
৫. নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
ডায়াবেটিস টাইপ
২
থেকে
সুস্থ
হতে
চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার
রক্তের
শর্করার স্তর
নিয়মিত পরীক্ষা করা
উচিত,
এবং
ওষুধ
বা
ইনসুলিন ব্যবহারের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসক যদি
প্রয়োজন মনে
করেন,
তবে
বিশেষ
খাদ্যাভ্যাস বা
ব্যায়ামের পরামর্শও দিতে
পারেন।
উপসংহার
ডায়াবেটিস টাইপ
২
একটি
নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ,
যা
সঠিক
খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং
জীবনযাত্রায় কিছু
পরিবর্তন আনলে
সুস্থভাবে মোকাবিলা করা
সম্ভব।
তবুও,
এটি
একটি
দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা, তাই
ধৈর্য
ধারণ
করা
এবং
নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ
করা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment